Header Ads

Header ADS

মানুষ ঘুমের মধ্যে যে স্বপ্ন দেখে তার তাৎপর্য কী? মানুষ কেন স্বপ্ন দেখে? মানুষের স্বপ্ন।

মানুষ ঘুমের মধ্যে যে স্বপ্ন দেখে তার তাৎপর্য কী?
আমার আগের একটি আর্টিকেলে আমি ব্যাখ্যা করেছিলাম যে মানুষ আসলে শরীর ক্লান্ত হলে নয় মস্তিষ্ক ক্লান্ত হলেই ঘুমায়। সেটার প্রেক্ষিতে আমি আজকে আমার নতুন আর্টিকেল নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকের আর্টিকেলের বিষয় মানুষ যে ঘুমের মধ্যে কেন স্বপ্ন দেখে বা সেই স্বপ্নটার তাৎপর্য কী?

আগের আর্টিকেলের বর্ণনা অনুযায়ী মস্তিষ্কের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়লে মস্তিষ্ক ক্লান্ত হয়ে যায়। তাই সে আর ঠিক মতো কাজ করতে পারে না। তখন মানুষের বিশ্রাম বা ঘুমানো দরকার।এটার সেটিংস ঠিক আপনার হাতের এন্ড্রয়েড সেট টার মতো। এন্ড্রয়েড সেটে নেট ব্যবহার করার সময় দেখা যায় একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ ডাটা খরচ করার পর আপনাকে সতর্কবানী দেওয়া হয়। একটু পার্থক্য হলো মোবাইলের ডাটা খরচের লিমিট আপনি নিজে সেট করেন, আর মস্তিষ্কের ডাটা খরচের লিমিট উপর থেকে সেট করা। তবে একটা কমন মিল আছে সেটা হচ্ছে ডাটা লিমিট সেট করার ক্ষেত্রে আপনার মোবাইল সেট টা কতটুকু উন্নত সেটার উপরও নির্ভর করে। মস্তিষ্কের ক্ষেত্রেও বিষয়টা একই।

আগেই বলেছি ঘুম হচ্ছে মস্তিষ্কের ফিলিং স্টেশন। আপনার মোবাইলের ডাটা শেষ হওয়ার সতর্কবানী এলে যেমন আপনি আবার ডাটা লোড করেণ তেমনি আপনার মস্তিষ্কের উপর চাপ বেশি হওয়ার সতর্কবাণী এলে আপনার মস্তিষ্ককেও আবার লোড করতে হয়। আর এই লোড হয় ঘুমের মাধ্যমে।

ঘুমালে মানুষের মস্তিষ্ক বিশ্রাম নেই। তখন মস্তিষ্কের বেশিরভাগ নিউরন শান্ত হয়ে যায়। কিন্তু মস্তিষ্ক পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় হয় না। মস্তিষ্ক পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় হলে মানুষ মারা যাবে। আবার পুরোপুরি সক্রিয়ও থাকে না। এই সময় মানুষ অর্ধমৃত অবস্থায় থাকে।

মানুষের মস্তিষ্কের থাকে তিনটি ভাগ। এই তিনটি অংশে বিভক্ত রয়েছে ৭০লক্ষ্য নিউরন। মস্তিষ্কের একেক অংশের একেক গুচ্ছ নিউরন শরীরের ভিন্ন ভিন্ন কাজ নিয়ন্ত্রন করে। আর তাই যখন যে অংশের কাজ বেশি হয় তখন সেই অংশ তাড়াতাড়ি ক্লান্ত হয়। তাই যাদের মাথা ব্যাথার সমস্যা আছে তারা অনেক সময় লক্ষ্য করেণ যে একেক সময় তাদের মাথার একেক অংশে ব্যাথা করে। আর ঘুমানোর সময় সেই অংশ প্রায় পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় বললেই চলে। এভাবে কিছু নিউরন প্রায় নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়, আর কিছু নিউরন কিছুটা সক্রিয় থাকে।বেশিরভাগ নিউরন নিষ্ক্রিয় থাকার কারনে মানুষের আসেপাশে পরিবেশের সাথে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তাই বেশি জোড়ে শব্দ না হলে সহজে মানুষের ঘুম ভাঙে না। আবার যারা কোনো ধরনের পরিশ্রম করে না অথবা নিউরন খুব বেশি উত্তেজিত হয়ে যায় এই ধরনের কাজ করে তাদের নিউরন খুব বেশি নিষ্ক্রিয় হয় না। তাই ঘুমানোর পর সামান্য কোনো শব্দেও তাদের ঘুম ভেঙে যায়। আর মানুষের ঘুমানোর ফলে নিউরন রিচার্জ হয়ে গেলে নিজেই সক্রিয় হয়ে ওটে এবং মানুষের ঘুম ভাঙে।

মানুষ স্বপ্ন দেখে তার মনের কারণে। অনেকেই যদিও মনে করেন যে মন মস্তিষ্কের অংশ কিন্তু এটা ঠিক না। এই নিয়ে আমি পরবর্তীতে আরেকটি আর্টিকেল লিখব। তবে মন যে মস্তিষ্কের অংশ নয় তার একটি প্রমাণ হচ্ছে এই মানুষের স্বপ্ন। বলা যেতে পারে মন মস্তিষ্কের শত্রু। আর মন মস্তিষ্ক উভয়েই আমদের দেহের উপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চাই।

সকলেই জানে যে মানুষ যখন ঘুমায় তখন তার মস্তিষ্কের অনেকটা নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। আর তখন মস্তিষ্কের কোনো কিছু চিন্তা করার এবং শরীর নিয়ন্ত্রন করার সামর্থ্য থাকে না। আর তখনি মন মানুষের শরীরকে কব্জা করে নেয়। তখন আমাদের চিন্তাশক্তি ও আমাদের শরীর নিয়ন্ত্রন করে আমাদের মন। আর সেটা তার যা ইচ্ছা তাই চিন্তা করে। একেকদিন একেক ধরনের চিন্তা করে এবং চিন্তাধারণা অনুযায়ী আমাদের শরীরকেও নিয়ন্ত্রন করে।

আমরা জাগ্রত অবস্থায় আমাদের মস্তিষ্কের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হই। তো আমরা স্বভাবতই সেই কাজটাই আগে করি যেটা আমাদের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ, যেটা আমাদের উপর বেশি চাপ বা বেশি প্রভাব ফেলে। এই বিষয়টা মস্তিষ্ক ও মন উভয়ের ক্ষেত্রে একই। তাই আমরা ঘুমের সময়ও সেই বিষয়েই স্বপ্ন দেখি যেটা আমাদের মনে বেশি প্রভাব ফেলে অথবা আমরা যে বিষয়ে বেশি চিন্তা করি। যেমনঃ পরীক্ষায় ফেল করা বা ফার্স্ট হওয়া, আপনজনের কাছ থেকে আঘাত পাওয়া, কোথাও ভয় পাওয়া, চাকরি চলে যাওয়া বা প্রমোশন পাওয়া, ব্যবসায় অতিরিক্ত লাভ বা লোকসান হওয়া, লাভারের সাথে ব্রেকাপ বা নতুন লাভার পাওয়া ইত্যাদি। তবে এগুলোর সবগুলোর ক্ষেত্রে হারানোর বিষয়েই সবাই বেশি চিন্তা করে। মানুষ স্বভাবতই এরকম। আমরা কি হারায়ছি সেটা নিয়ে যতবেশি চিন্তা করি কতকিছু যে পেয়েছি সেটা নিয়ে না পাওয়ার বিষয়ের তুলনায় ১০০ ভাগের ১ ভাগও চিন্তা করি না।

মনের প্রভাবে আপনি স্বপ্ন দেখেন তাই প্রায় সময়ই আপনি রাতে ঘুমের মধ্যে চেঁচামেঁচি করেন। কিন্তু সকালে ঘুম থেকে উঠার পর আপনাকে আপনার পরিবার যখন কথাটা বলে তখন আপনি সেটা বিশ্বাস করেন না। আসলে আপনি রাতে কী করেছেন সেটা আপনি জানেনই না। আর এতে আপনার কোনো দোষ নেই। এটা পুরোটাই আপনার মনের কারসাজি। যেহেতু জাগ্রত অবস্থায় আপনি আপনার মস্তিষ্কের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হন তাই রাতে আপনার মন আপনার শরীর ও চিন্তাশক্তিকে কীভাবে পরিচালনা করেছে সেটা আপনার জানার কথা না। তো সেটা নিয়ে তর্কবিতর্ক না করে চুপচাপ কথাটা মেনে নিন। এক্ষেত্রে সবাই একটু আপনাকে নিয়ে হাসাহাসি করলেও আপনার মান সম্মানের তেমন কোনো ক্ষতি হবে না। বিপরীতে সবাইকে খুশি দেওয়ার মতো একটা মহৎ কাজ করবেন আপনি।

আমার আজকের আলোচনা এইটুকুই। আমার আর্টিকেল কেমন লাগলো কমেন্টে জানাবেন। আর এরকমই আরো অন্যান্য বিষয়ে বর্ণনা পেতে আমার ব্লগকে ফলো করবেন। আর আপনারা যদি চান যে আপনাদের কোনো পছন্দের বিষয় সম্পর্কে আমার ব্লগে বর্ণনা করি তাহলে সেটা কমেন্টবক্সে জানান। আমি আমার সেরা টা দেওয়ার চেষ্ঠা করব।

ধন্যবাদ,

ইমন দাশ









No comments

Powered by Blogger.