Header Ads

Header ADS

মুরগী নাকি ডিম কোনটা আগে পৃথিবীতে এসেছে? মুরগী কীভাবে সৃষ্টি হয়েছিল? ডিম আগে নাকি মুরগী আগে?

মুরগি নাকি ডিম কোনটি আগে এসেছে?

বর্তমানে সারাবিশ্বে অধিক আলোচিত একটি প্রশ্ন হলো মুরগি আর ডিমের মধ্যে কোনটি পৃথিবী আগে এসেছে? আমি কিছু যুক্তি দিয়ে তার উত্তর খোঁজার চেষ্ঠা করব।

বিঃ দ্রঃ এখানে বর্ণিত যুক্তিগুলো সম্পুর্ণ বিজ্ঞানভিত্তিক। এখানে ধর্মীয় কোনো যুক্তির ব্যাখ্যা অথবা ধর্মীয় যুক্তিকে অগ্রাহ্য করার চেষ্ঠা করা হয় নি।

এই প্রশ্নের উওর যদি হয়, ‘ডিম আগে এসেছে’ তাহলে প্রশ্ন থাকে , ‘মুরগি ছাড়া ডিম কোথা থেকে এলো?’

আবার, যদি উত্তর হয়, ‘মুরগি’ তাহলে প্রশ্ন হয়, ‘ডিম ছাড়া মুরগি কীভাবে হলো?

খুবই বিভ্রান্তকর প্রশ্ন।

ধরে নিই প্রথমে মুরগি পৃথিবীতে এসেছে। এর বিপরীতে প্রশ্ন আসে যে , ‘ডিম ছাড়া মুরগি কীভাবে হলো? এর প্রেক্ষিতে সকলের কাছে আমার একটি প্রশ্ন , ‘মানুষ কোথা থেকে সৃষ্টি হয়েছে?’ মানুষ কী কোনো ডিম থেকে সৃষ্টি হয়েছিল?’

শুধু মানুষ নয় মানুষ ছাড়াও এমন অনেক প্রানী আছে যারা কোনো ডিম থেকে সৃষ্টি হয় নি। যেমনঃ গরু, ছাগল, ঘোড়া, বাঘ, কুকুর, বিড়াল ইত্যাদি ইত্যাদি অনেক প্রানী রয়েছে। এগুলো কীভাবে সৃষ্টি হলো?

বিজ্ঞানমতে, পৃথিবীর জলবায়ু এবং পরিবেশের অবস্থা প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। তাই জলবায়ু ও পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিয়ে পৃথিবীতে প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন প্রাণী ও উদ্ভিদ। আবার অনেক প্রাণী বিলুপ্ত হচ্ছে অনেক, প্রানীর ডিএনএ (ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক এসিড) মিউটেশনের কারণে জীবন ধারনের প্রক্রিয়া, এমনকি পুরো জীবটাই বদলে গিয়ে ভিন্ন বৈশিষ্টের জীবে রূপান্তরিত হচ্ছে। পৃথিবী প্রথম যেদিন সৃষ্টি হয়েছিল সেদিনের জলবায়ু ও পরিবেশ আর আজকের জলবায়ু ও পরিবেশের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। সেই সাথে পার্থক্য রয়েছে তখনকার জীব আর এখনকার জীবের মধ্যে। এখনপর্যন্ত সকল বিলুপ্ত ও রূপান্তরিত প্রাণী মিলিয়ে জীববিজ্ঞানীরা প্রায় ৮৭ লক্ষ প্রজাতির প্রানী আবিষ্কার করেছে। এবং এর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে। যুক্তরাজ্যের ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটির এক সমীক্ষা থেকে জানা গেছে যে, বিশ্বে প্রায় এক ১ট্রিলিয়ন প্রজাতির প্রাণী রয়েছে। এবং বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র তার ০.১ শতাংশ আবিষ্কার করতে পেরেছে। তো এইভাবেই পৃথিবীর পরিবেশের সাথে পরিবর্তীত হতে হতেই সৃষ্টি হয়েছে মানুষ, গরু, ছাগল, কুকুর, বিড়াল, সবই। যেমনঃ গরিলা ধীরে ধীরে রূপান্তরিত হয়ে মানুষ হয়েছিল, ধারণা করা হয় যে নেকড়ে শেয়াল ধীরে ধীরে রূপান্তরিত হয়ে কুকুর হয়েছিল ইত্যাদি ইত্যাদি। গবেষণায় জানা গেছে যে প্রাচীনকালে বর্তমান মুরগিরই অনুরূপ এক পাখি ছিল বিজ্ঞানীরা এর নাম দেয় প্রোটো চিকেন (Proto Chicken) যা পরবর্তীতে রূপান্তরিত হয়ে মুরগি হয়েছিল। এই প্রেক্ষিতে বলা যায়, মুরগিই আগে পৃথিবীতে এসেছিল।

আবার, এই রূপান্তরিত হওয়ার বিষয়ে বলা যায়, ডিম আগে পৃথিবীতে এসেছিল। জীববিজ্ঞানের মতে, ভিন্ন বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন একই জীবের মধ্যে প্রজনন ঘটলে ওই দুই ভিন্ন বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন ডিএনএ মিলিত হওয়ার ফলে ভিন্ন বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন জীবে পরিণত। কখনো কখনো তার বৈশিষ্ট্য ও জীবনধারণ প্রক্রিয়ার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়। এই ভিন্ন বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন জীব সৃষ্টি হয় ডিম সৃষ্টির মাধ্যমে। ঠিক যেমন উদ্ভিদ বিজ্ঞানীরা দুটি ভিন্ন জাতের উদ্ভিদের প্রজননের মাধ্যমে উন্নত জাতের উদ্ভিদের বীজ তৈরি করে। তেমনই দুটি ভিন্ন জাতের বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন প্রাণীর প্রজননের ফলে উৎপন্ন হয় একটি ভিন্ন বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন ডিম্বক। যা থেকে সৃষ্টি হয় ভিন্ন বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন জীব। পরবর্তীতে ডিএনএ মিউটেশন না ঘটলে ও প্রাকৃতিক পরিবেশের অবস্থা পরিবর্তীত না হয় তাহলে সেই জীবের ডিম থেকে পরবর্তীতে সেই জীবের প্রতিরূপ সৃষ্টি হবে। এভাবে বলা যায় প্রোটো চিকেন কোনো ভিন্ন বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন প্রোটো চিকেন এর সাথে প্রজনন করে মুরগির ডিম উৎপন্ন করেছিল। তখনই মুরগির জন্ম হয়। এক্ষেত্রে বলা যায়, ডিম মুরগির আগে পৃথিবীতে এসেছিল।

আবার ডিম যে মুরগির আগে এসেছে তার আরও একটা যুক্তি আছে। যখন একটা পাত্রে বা একটা গর্তে দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টির পানি জমা হলে সেখানে কিছু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পোকা দেখা যায়। এগুলো ওই পোকা গুলোর মা এসে ওদের ওখানে রেখে যায় নি। ওরা ওখানেই উপযুক্ত পরিবেশ পেয়ে ওখানেই সৃষ্টি হয়েছে। অর্থাৎ এই পৃথিবীতে সব জায়গাতেই অসংখ্য জীবের বীজ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। আবার প্রাকৃতিক কারনেও কিছু জীবের বীজ সৃষ্টি হচ্ছে। উপযুক্ত পরিবেশ পেলে সেই বীজগুলো বিকশিত হয়। এই জন্যই প্রতিনিয়ত নতুন নতুন জীব আবিষ্কৃত হচ্ছে। পৃথিবীর সব অঞ্চলের জলবায়ু ও পরিবেশ একই নয়। তাই সব দেশে সব জীব জন্মায় না। বন্ধুরা ডিম আগে নাকি মুরগি আগে পৃথিবীতে এসেছে আজ আমি সেটার কিছু সম্ভবনাময় যুক্তি বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা করলাম। কিন্তু সর্বশেষ কথা হলো, ‘একটি বৃত্ত আঁকা শেষ হওয়ার পর সেটার শুরু এবং শেষ বিন্দু খুঁজে বের করা অসম্ভব।’ আর সৃষ্টিকর্তার সৃষ্ট এই প্রকৃতি খুবই রহস্যময়। এটার সম্পুর্ণ রহস্যভেদ করা অসম্ভব। মনে রাখবেন, ‘বিজ্ঞান সৃষ্টি হয়েছে প্রকৃতি থেকে, প্রকৃতি বিজ্ঞান নয়।’

আর্টিকেলটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। কেমন লাগলো কমেন্টে জানাবেন। আপনি যদি চান যে আপনার কোনো প্রশ্ন বা পছন্দের বিষয় নিয়ে আমি আর্টিকেল লিখি তাহলে অবশ্যই আমাকে জানাবেন। সেটা নিয়ে লেখার জন্য আমি আন্তরিকভাবে চেষ্টা করব।

ধন্যবাদ,

ইমন দাশ




No comments

Powered by Blogger.